রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
টানা গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধিতে রাঙামাটি জেলার ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গতকাল শুক্রবার কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট তিন ফুট থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। জলকপাট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে আরও ৩২ হাজার মোট ১ লাখ কিউসেক পানি কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় ২টি পৌরসভাসহ ২০ ইউনিয়নের ৮১টি গ্রাম, ৫ হাজার ৭০০ পরিবার এবং ১৮ হাজার ১৪৭ জন মানুষ বন্যাকবলিত। জেলায় বন্যায় ৫৪৮টি ঘর, ৬১টি সড়ক, ২টি ব্রিজ-কালভার্ট, ৯৮ একর ফসলি জমি, ৪৩টি মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলার ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯৩৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। অপরদিকে জেলার বাঘাইছড়ি পৌরসভার ও ৮টি ইউনিয়নের পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও লংগদু উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। রাঙামাটি সদরের আসাম বস্তি, মালিপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। দ্রুত পানি কমিয়ে দেওয়ার দাবির জানান তারা। বাঘাইছড়ির স্থানীয় সংবাদকর্মী মাহমুদ হাসান জানান, বাঘাইছড়িতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও অনেক সড়ক ডুবে আছে। বৃষ্টি না কমলে পানি সরতে সময় লাগবে। মূলত উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে পানি কমতে সময় লাগছে। রাঙামাটি শহরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী বলেন, শুনেছি কাপ্তাই বাঁধ খুলে দিয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই বাসা থেকে পানি কমছে না। দিন দিন বাড়ছে। বাচ্চা নিয়ে খাওয়াদাওয়ায় খুব সমস্যা হচ্ছে। রাঙামাটি শহরের আসাম বস্তি এলাকার বাসিন্দা মো. তুহিন বলেন, সরকার ত্রাণ না দিয়ে দ্রুত পানিটা কমিয়ে দিলে স্থানীয়রা সুবিধা পাবে। পানির কারণে বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
